শারমিন সুলতানা সম্প্রতি কানাডা’র একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছেন। স্টুডেন্ট ভিসায় তিনি বছর তিনেকের জন্য কানাডা যাবেন। কিন্তু যাবার আগে তার মনে অসংখ্য প্রশ্ন। শারমিনের মতোই বাংলাদেশ থেকে যারা কানাডা যাবেন, তারা বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হন। আজকের এই লেখাটি তাদের জন্যই যারা বাংলাদেশ থেকে কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসায় যাবেন কিংবা যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
প্রথম যে প্রশ্নটি স্টুডেন্টদের মাথায় কাজ করে, সেটি হল, কানাডায় স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় কী কোনো স্টুডেন্ট ভিসা স্ট্যাটাস বদলাতে পারে? উত্তর হল, কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা থাকা অবস্থায় অন্য কোনো ভিসাতে উক্ত স্টুডেন্ট তার স্ট্যাটাস পরিবর্তন করতে পারবেন না।
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে যে, কানাডায় স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় কেউ যদি পড়াশশোনা বাদ দিয়ে দেয়, তাহলে কী হবে? উত্তরে বলা যায়, কানাডায় যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট হিসেবে কোনো ব্যক্তি পড়তে যাবেন, সেখানে এনরোল থাকতে হবে এবং নিয়মিত টিউশন ফি পরিশোধ করতে হবে।
কোনো স্টুডেন্ট ড্রপ আউট হলে এবং সাধারণত পাঁচ থেকে ছয়টি ক্লাস মিস করলেই স্টুডেন্টশিপ বাতিল হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পরবর্তীতে উক্ত স্টুডেন্টের ভিসা বাতিল হয়ে যাবে এবং তাকে কানাডা থেকে বের হয়ে যেতে হবে।
আরও কিছু একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসায় যাবার পর বাংলাদেশে ঘুরতে যাওয়া যাবে কী? উত্তরে বলা চলে, স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ থাকাকালীন পর্যন্ত যাবে। কারণ এটি মাল্টিপল ভিসা।
কানাডায় কোনো কলেজে স্টুডেন্ট হিসেবে যাবার পর হেলথ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থা কী? উত্তর হল, সংশ্লিষ্ট কলেজ থেকে হেলথ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থা করা হয়। বাংলাদেশ থেকে কানাডায় কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়কে টিউশন ফি পরিশোধের উপায় কী?
উত্তরে বলা চলে, কলেজ বা ইউনিভার্সিটি থেকে প্রাপ্ত লেটারে ইউনিভার্সিটির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং সুইফট কোড ইত্যাদি দেয়া থাকে। স্টুডেন্ট এবং তার বাবা/ বড়ভাই/ মা-এর জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট বাংলাদেশের যে কোনো ব্যাংকে থাকলে সেখান থেকে টাকা সরাসরি ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফাইলের মাধ্যমে কানাডা’র কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে পাঠানো সম্ভব।
স্টুডেন্ট হিসেবে কানাডায় পড়তে যাবার পর অন ক্যাম্পাস জব, অফ ক্যাম্পাস জব, অন ক্যাম্পাস অ্যাকোমোডেশন অফ ক্যাম্পাস বলতে কী বোঝায়? উত্তর হল, সাধারণত যে সব স্টুডেন্ট আইইএলটিএস স্কোরসহ কানাডায় যান, তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ কর্তৃক লেটারে অফ ক্যাম্পাস অ্যাকোমোডেশন লেখা থাকতে পারে।
অর্থাৎ, উক্ত স্টুডেন্ট ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ বাইরে থাকতে পারবেন। একইভাবে জবের ক্ষেত্রেও লেখা থাকতে পারে যে, কোনো স্টুডেন্ট অন ক্যাম্পাস জব করতে পারবেন। অর্থাৎ, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের বাইরে কাজ করতে পারবেন না। উল্লেখ্য, কানাডায় একজন স্টুডেন্ট সপ্তাহে বিশ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারবেন না।
অনেকেই তার স্ত্রী কিংবা স্বামীকে কানাডায় নিয়ে যেতে চান। কাজেই প্রশ্ন হল, কানাডায় স্টুডেন্ট হিসেবে পড়তে যাবার পর স্পাউসকে কী পরবর্তীতে নিয়ে যাওয়া যাবে? উত্তর হল, ওপেন ওয়ার্ক পারমিটের মাধ্যমে স্পাউসকে কানাডায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
কানাডায় ইমিগ্রেশন এবং স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ফ্রি তথ্য এবং সহযোগিতা পেতে ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সেটেলমেন্ট’ ভলান্টিয়ারগণ দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে। তাদের ওয়েবসাইট এবং ফোরাম থেকে ঘুরে আসতে পারেন: ইমিগ্রেশন অ্যাণ্ড সেটেলমেন্ট ওয়েবসাইট এবং ইমিগ্রেশন অ্যাণ্ড সেটেলমেন্ট ফোরাম ।